Wednesday, December 30, 2009

আহ্বান (AAOHAN)

'অসেচনক'-এর কথা আগেই বলেছি। "নয়ালাপ"-ও ঠিক সেরকমই একটা দেওয়াল-পত্রিকা। আমাদের এলাকায় প্রকাশিত হত। যদিও এখন আর এর কোন অস্তিত্ব নেই। সালটা ছিল ১৯৯৩। নয়ালাপ-এর দেওয়ালী সংখ্যায় প্রকাশিত হয়েছিল এই কবিতাটা। 'কালীপূজো 'র উৎসবে তখন মাতোয়ারা চারদিক।

           ।।  আহ্বান  ।।


হে মা উগ্রচণ্ডা ! আবির্ভূত হও,
সম্মুখে প্রশস্ত রণক্ষেত্র, শঙ্খধ্বনি।
চতুর্দিকের আলোকসজ্জায় তোমার পথ আজ আলোকিত 
অমর্ত্যলোকবাসের এ উপযুক্ত সময় নয়,
শেষ হোক্ সবার প্রতীক্ষা !


প্রতীক্ষা সবার, সব মর্ত্যবাসীর,
আজকের যুগ হারুণ-অল-রশিদের নয়
এ যুগের 'রশিদ' ভিন্ন প্রেক্ষাপটে !
'ইব্রাহিমে'র দল আজ অলিতে-গলিতে,
খবরে শোনাচ্ছে সব অদ্ভুত বেলেল্লাপনার কাহিনী !


আমরা কি 'লজ্জা' আটকে লজ্জা ঠেকাব ?
সে তো অসম্ভবের বালিতে হর্ম্য গড়ে তোলা !
এ ঘোর কালিমালিপ্ত আঁধার ঠেকাতে
তাই তো আজ দিকে দিকে এত আলোকসজ্জা !
তোমার আলোর-আঁধারে মুছে যাক্  আজ সব লজ্জা।


হে শবশিবারূঢ়া ! তোমার ত্রিনেত্রে প্রজ্বলিত হোক্ অগ্নি,
পদতলে নিষ্পেষিত হোক্ ছদ্মবেশী সব ভণ্ডেরা,
চরাচরে নামুক প্রগাঢ় শান্তি।
হে বরাভয়ি ! তোমার বরাভয় হস্ত সঞ্চালনে - 
আমাদের করো নিঃশঙ্ক ।।
   _____________

Tuesday, December 29, 2009

দুটি কবিতা (DUTI KOBITA)

আজ আর এখানে কোন কবিতা দিলাম না। পরিবর্তে আমার অন্যত্র প্রকাশিত দুটি কবিতার লিঙ্ক দিলাম।
কবিতা দুটির একটি হল কবিতা এবং অপরটি হল প্রেমিকা। কবিতা দুটিই প্রকাশ পেয়েছে কফিহাউসের আড্ডায়
কবিতা ইতিপূর্বে মালঞ্চতে (১৯৯৭-এর শারদীয়া সংখ্যা) প্রকাশিত হয়েছিল। আর প্রেমিকা প্রকাশ পেয়েছিল পিয়াসে (১৯৯৭-এ)। মালঞ্চ আর পিয়াসের কথা আগেই বলেছি।

Sunday, December 27, 2009

জীবন (JIBON)

"

একটা নদীর মত জীবন বয় বাঁকে বাঁকে
সেই উৎস থেকে সুদূর মোহনার দিকে ...
বিচিত্র এক পথ পরিক্রমা আপন মনে
কত কী পড়ে থাকে পিছনে !
পাহাড় - মালভূমি , শহর - নগর
কত ঘন অরণ্য - নিস্তব্ধ প্রান্তর
কোলাহল মুখর কত বন্দর , বাজার - হাট
লোকারণ্য স্নান ঘাট ।
প্রকৃতিপ্রেমী , দর্শনার্থী
মন্দিরের ঘণ্টাধ্বনি ,কত পুণ্যপ্রার্থী !
সব শুধু দু'দণ্ডের আলাপ - পরিচয়,
তারপর সব ছাপিয়ে যায়
শুধু কুলুকুলু ধ্বনি , চকিত চপল অঙ্গে
নদী চলে , নিজ তালে উত্তাল তরঙ্গে ।
একসময় আসে সেই অনিবার্য মোহনা
শষ হয় ক্লান্ত পদচারণা ,
অকুল সমুদ্রে নদী লীন হয়ে যায়
যেমন , মৃত্যু - পারাবারে মানব - জীবন লুকায় ।
       __________________    "


মালঞ্চ : পৌষ সংখ্যা , ১৯৯৬।

Friday, December 25, 2009

প্রতিবেশী (PROTIBESHI)


ভাল প্রতিবেশী কে?
সেই 'গুড সামারিটান'-এর
গল্পটা সবার জানা!
একজন ভাল প্রতিবেশী -
একজন ঈশ্বরের দূত!

ঈশ্বর তাঁর শেষ রক্তবিন্দুও
দান করেছেন সবার মুক্তির জন্য।
কিছু ভাল কাজ কি বয়ে আনবেনা
সেই রক্তবিন্দুর প্রতি কিছু সাফল্য,
আর মাতা মেরীর চোখে আনন্দাশ্রু?

________________ ”

শুভ বড়দিন (MERRY CHRISTMAS DAY)







শুভ বড়দিন

Wednesday, December 23, 2009

একান্ত আপন (EKANTO AAPON)

"
উন্মুক্ত বাতাসের পরশে
ভেসে ওঠে বহু স্মৃতি ......

ঊজ্জ্বল শৈশবের ; কল্পলোকের
সেই সমুদ্র , সেই পাহাড় !
ঔদার্য্যের রাজপ্রাসাদ !
আমার মনের অন্দরের খবর ,
যা কিছু ছিল সব একান্ত আমার
আছাদিত মনের অস্পষ্টতায় ।
আজ একান্ত নগ্ন চোখে
আর এক বিধ্বস্ত মরুভূমি চোখে পড়ে ,
আমার ভালবাসার পৃথিবীটার নগ্নরূপ ।
তবু আমার সত্তার গভীরের প্রাণ
প্রতিবাদ করতে গেলো -
কিন্তু রূঢ় বাস্তব তাকে থামিয়ে দিলো ।
আমার মনের ছবি একান্তই আমার 
রয়ে গেলো !
________________  "


রূপসী - দেওয়ালী সংখ্যা , ১৯৯০

Monday, December 21, 2009

নবীন - ২ (NOBIN - 2)

"
উন্মত্ত জোয়ার ছুটে আসে গ্রাসিতে অন্যায়
অবিচার, অত্যাচার ডুবে যাক্ বন্যায় ,
ডুবে যাক্ সেই সাথে ভীরুতা আর গ্লানি।
ভেঙে করো ধূলিস্যাৎ কঠিন কুঠার হানি -
অত্যাচারীর বিলাস সৌধ নিঠুর প্রাণে ,
ধ্বংস করি' জেগে ওঠো নব জয়গানে।


যৌবনের ঊছ্বসিত রক্তধারায়
নব মুকুলিত হও উনামদনায় ,
পিছে পড়ে থাকে যে তারে ধিক্ শত ধিক্
নবীনের জয়গানে মুখরিত হোক্ দিক ।।
 __________  "


রূপসী - শারদীয়া সংখ্যা , ১৯৯১

Thursday, December 17, 2009

আগমন (AAGOMON)

"
ভূমিষ্ঠ হবার পর থেকে উত্তপ্ত বাসনা
চেয়ে থাকে আকাশের দিকে।
কন্যাকুমারিকা থেকে 
কাঞ্চনজঙ্ঘার ধবল সৌরভে -
ভেসে চলে সেই বাসনা,  
খুঁজে ফিরে আমার ডিজনিল্যাণ্ড
আর স্বপ্নের প্যাগোডাকে।


হেরে গেছি আমি সময়ের 
স্বপ্নবাণী নিয়ে।
আর আজ এসেছি আমি
সবুজের শ্যামলিমায় বিজয়পতাকা উড়িয়ে
মোর মা'র বুকে - সব পথের শেষে ।
 ___________________  "


মালঞ্চ - শারদীয়া সংখ্যা , ১৯৯১

Monday, December 14, 2009

তবুও নতুন (TOBUO NOTUN)

"
এই পৃথিবীটা খুব পুরানো।
আর যে সূর্যটা রোজ
রাঙা - রোদে ভরিয়ে দেয়
আমাদের মাঠ - ঘাট - প্রান্তর ,
সেটা আরও পুরানো ।


তবু এই পুরানো মাটিতে
নতুন ফসলের ঘ্রাণ, কিংবা
ফোটা ফুলের নরম শরীরে
ঝড়ে পড়া শিশির কণা -
আমার এ চোখে নতুন লাগে !


বেশ কিছু পুরানো হয়ে গিয়েও
তবু নতুন হবার বাসনায় ,
ঋতু সমারোহে নিত্য নতুন বেশে
সেজে ওঠা এ পৃথিবী
এ চোখে সবই নতুন লাগে !


 _______________  "

১৯৯৬ -এ মালঞ্চ-র 'রবীন্দ্র সংখ্যা'য় এটা প্রকাশিত হয়েছিল।

Saturday, December 12, 2009

সুবর্ণ গোলাপ (SUBORNO GOLAP)

"
ওহে ! সুবর্ণ গোলাপ - 
আমি তোমার প্রেমে পড়েছি ।
তোমার ওই ঊজ্জ্বল দ্যুতিময়
গোলাপী পাপড়িগুলো,
আমাকে আকৃষ্ট করে ।
আমি ধেয়ে যাই তোমার কাছে
মৌ-লোভী পতঙ্গের মত !
তোমার পাপড়ি-সম মুখের দিকে তাকাই ।
ওই গোলাপী আভা কি তোমার -
অন্যকে বশ করার অস্ত্র ?
না কি তুমি লজ্জা পেয়েছ !
তবু আমি তোমার অধর চুমি'।
আমি নিংড়ে নিতে চাই তোমার
শেষ সৌরভটুকু !
তারপরে তুমি নিঃস্ব ,
ঝড়ে যাবে তুমি পড়ন্ত বেলায় ।
কিন্তু, তখনো তুমি আমার
আমার ভালবাসা ...!

__________ "

Wednesday, December 09, 2009

দৃশ্য (DRISHYA)

ই কবিতাটা ১৯৯০-এ 'রূপসী'-তে বাণী সংখ্যায় প্রকাশিত হয়েছিল।

  ।।  দৃশ্য  ।।

অস্তরবির শান্ত ছবি - আমি ক্লান্ত, পান্থ কবি
পায়ে চলার পথে - নয়ন ভরে দেখি।
নয়ন আমার দিশেহারা - হৃদয় মাঝে জাগছে সাড়া
কারে দেখায় - কোথায় লিখে রাখি।।
গাঁয়ের মাঠে, পথে-ঘাটে,     গাছের ফাঁকে, নদীতটে
                দেখছি যত দৃশ্য।
দুচোখ ভরি' দেখি বারবার     জানি থাকবেনা আর
                 সব হবে অদৃশ্য।।

       __________________

Monday, December 07, 2009

নবীন (NOBIN)

"
এসো নবপ্রাণ, এসো নবপ্রেরণা
এসো নবধ্যান, এসো নবধারণা
সত্যের মন্ত্রে, নবপ্রাণে দীক্ষিত হয়ে
যেথা মৃত্যু-শীতল স্রোত চলেছে বয়ে
সেথা চলো, হে নবীন! মুক্ত করো দ্বার
ঘুচিয়ে দাও আর্তজীবের হাহাকার!
ঘুচিয়ে দাও অলস দেহে জীর্ণতা ও জরা
নবীনতার প্রাণ-পরশে, মুক্ত হোক্ ধরা ।।
 __________________   "

এই কবিতাটা ১৯৮৯ -এ 'রূপসী'-তে বর্ষা সংখ্যায় প্রকাশিত হয়েছিল। 'রূপসী' নদীয়া জেলা থেকে প্রকাশিত।

Saturday, December 05, 2009

হারিয়ে না যায় (HARIYE NAA JAY)

"
পৃথিবীর চারিদিকে কবিতা ছড়ানো রয়েছে অনেক
সবাই তাকে খুঁজে পায় না,
আবার কেউ কেউ পায়।
এখানে বেজে চলেছে কত সুমধুর তান
অনেকে ভাবে তাকে - অযথা শব্দ,
আর কেউ কেউ ভাবে গান।


আমি যখন অন্ধকারে ঘুম থেকে 
জেগে উঠি - 
রাতের আঁধার যবে নিভছে ধীরে ধীরে।
দেখি, পৃথিবীটার সারা গায়ে
কবিতা আর গান ধূলো মাটি করে - 
মাখামাখি হয়ে আছে,
আর সূর্য্যের সোনারোদে সেগুলো
কেবলই চিক্ চিক্ করছে।
কেউ কেউ ওগুলোকে  
মূল্যবান সামগ্রী ভাবে - সিন্দুকে তুলে রাখে !
আমি, আর কেউ কেউ সারা গায়ে 
মেখে নিই ওদের,
যেন ওরা হারিয়ে না যায় ...!
    ________________  "

এই কবিতাটা মালঞ্চ - শারদীয়া সংখ্যা, ১৯৯৩-এ প্রকাশিত হয়েছিল।

Thursday, December 03, 2009

আগুনের ছড়া (AGUNER CHHARA)

 ১৯৯৮। বৈশাখ সংখ্যায় 'মালঞ্চ'তে প্রকাশিত হয়েছিল এই কবিতাটা।

     ।।  আগুনের ছড়া  ।।


আগুন, আগুন, আগুন রে ভাই
          আগুন চারিদিকে।
স্থলে আগুন, জলেও আগুন
          আগুন আকাশ ব্যেপে।।
বাসে আগুন, ট্রামে আগুন
          জ্বলছে আগুন ট্রেনে।
জ্বলছে ক্রোধ লোকের চোখে
          আগুন বাণ হেনে।।
চারিদিকে আগুন শুধু
          দেখ আগুন তেলে।
সব কিছুরই মূল্য যেন
          ছুটছে আগুন জ্বেলে।।
তাও যদি হয় দামে আগুন
          আগুন দেখ লাইনে।
তাইতো রাগে পড়ছি ফেটে
          আগুন মোদের গানে।।
সব কিছুতে আগুন কেমন
          পাল্লা দিয়ে ছোটে।
সত্য কথাই বলি এটা
          নয়কো মিথ্যা মোটে।।
     _________________


 

Tuesday, December 01, 2009

কখনো ঝড় আসে (KAKHONO JHAR AASE)

কখনো ঝড় আসে

খনো ঝড় আসে মূক করে সব ভাষা
আদি-ভাষা ইশারা, অঙ্গবিকৃতি।
অক্ষর লেপটে যায় ছায়ার শরীরে,
নিশীথ অন্ধকারে ভাসা এক পুরানো মুখ
হিমেল হাওয়ায় বয়ে যায় !
ছায়ার কি ঘ্রাণ আছে কোন?
ছায়ার ঘ্রাণ নেই।
তবু নাসারন্ধ্র ফুলে ওঠে
এক পুরানো চেনা ঘ্রাণে !


কখনো ঝড় আসে স্মৃতির জঙ্গলে,
সজোর ঝাপটায় কখনো উড়ে আসে
কয়েকটা ঝড়া পালক।
এতো শুধু চেনা ঘ্রাণ নয়
চেনা শরীরে চেনা মুখ,
যার ব্যর্থ প্রতিশ্রুতিতে এখনও 
ক্ষতবিক্ষত রয়েছে বুক !
  __________


এই কবিতাটা ১৯৯৫ -এর শারদীয়া মালঞ্চ - তে প্রকাশিত হয়েছিল।